[ad_1]
Reading Time: 4 minutes
ঘর সাজানোর কথা বলতেই আমরা ভাবি পর্দা, কুশন কাভার, আয়না, প্ল্যান্টস কিংবা লাইট দিয়ে ঘরের গতানুগতিক আবহ পাল্টে দেয়ার কথা। তবে এসব কিছুর সাথে শতরঞ্জি ও কার্পেটের ব্যবহার শীতকালে ঘরের ভেতরটা আরও আরামপ্রদ ও নান্দনিক করে তুলবে। শতরঞ্জি ও কার্পেট এর মধ্যে কার্পেট কিছুটা ভারী ধাঁচের হলেও শীতে ঘর উষ্ণ রাখার এটি অন্যতম উপায়। বিছানা থেকে পা ফ্লোরে ফেলতেই ঠান্ডা হয়ে থাকা ফ্লোরের ধাক্কা যেন আপনাকে অনুভব করতে না হয়, সে কারণে রঙিন ডিজাইনের চমৎকার সব প্যাটার্ন থেকে পছন্দের ডিজাইনের কার্পেট রাখতে পারেন বিছানার ঠিক পাশেই। এছাড়া লিভিং কিংবা ড্রইং রুমের ফ্লোরের জন্য মাঝারি কিংবা বড় আকৃতির কার্পেট কিনতে পারেন ঘরের অন্যসব আসবাব কিংবা ডেকোর আইটেমের সাথে মিল রেখে। আর এ জন্য শীতকালে ঘর সাজাতে কার্পেটের ব্যবহার এর জন্য ঢাকায় কার্পেট মার্কেট কোথায় আছে এবং এর দাম কেমন হতে পারে, এ সম্পর্কে প্রয়োজনীয় তথ্য থাকছে আজকের ব্লগে।
লিভিং রুম ডেকোর হোক কিংবা ড্রইং রুম, কার্পেটের ব্যবহার হয়ে আসছে বহু বছর ধরে। উডেন ফ্লোর কিংবা টাইলসের উপর ব্যবহৃত এ কার্পেট বুননের জন্য বিভিন্ন ধরের ফেব্রিক ব্যবহার করা হয়। বিশেষ করে শীতের সময় ফ্লোরের ঠান্ডা ভাব এড়িয়ে চলতে কার্পেট বেশ উপকারী। এছাড়া ঘর সাজানোর জন্যও অনেকেই ডিজাইন ভেদে ছোট-বড় বিভিন্ন ধরনের কার্পেট ব্যবহার করে থাকেন। যদিও বেড রুমের তুলনায় লিভিং রুমে বড় আকৃতির কার্পেটের ব্যবহার বেশি হয়ে থাকে। শীতকালে ঘর সাজাতে কার্পেটের ব্যবহার হিসেবে অনেকেই আবার লিভিং রুমের ফ্লোর সম্পূর্ণটাই কার্পেট দিয়ে ঢেকে রাখতে পছন্দ করেন। সেক্ষেত্রে নিয়মিত কার্পেট পরিষ্কার রাখার নিয়ম সম্পর্কে অবশ্যই জেনে নেয়া জরুরি।
কার্পেটে ধুলোবালি অনেক আটকে থাকার কারণে, ঘরের প্রতিটি রুমে কার্পেট ব্যবহার না করাই ভালো। বিশেষ করে কিচেন এবং ডাইনিং এরিয়ায় কার্পেটের ব্যবহার না করাই উত্তম। ড্রইং এবং লিভিং রুমের জন্য বড় আকৃতির কার্পেট ব্যবহার করতে পারেন, অন্যদিকে বেড রুমের জন্য ছোট কিংবা মাঝারি আকৃতির কার্পেট রুমের সৌন্দর্য বাড়িয়ে দেবে আরও কয়েকগুণ।
বেড রুমের ক্ষেত্রে বিছানার পাশে, ইজি চেয়ার এর পাশে, ব্যালকনি অথবা ড্রেসিং টেবিলের সামনের ফ্লোরে কার্পেট কিংবা শতরঞ্জি রাখতে পারেন। অন্যদিকে ব্যালকনি কিংবা ছাদ বাগানের জায়গার জন্য কৃত্রিম ঘাসের কার্পেট বা গ্রাস কার্পেট ব্যবহার করা যেতে পারে। বাজারে বিভিন্ন ম্যাটেরিয়ালের গ্রাস কার্পেট রয়েছে। এর মধ্যে পাট, রেক্সিন, প্লাস্টিক, পাতলা রাবার ও সিনথেটিক এর কার্পেট অন্যতম।
কার্পেটের ব্যবহার মূলত মৌসুম ভেদে একেক ধরনের হয়ে থাকে। কেননা, গরমকালের জন্য প্রয়োজন হয় ঘরের ভেতর আরাম এনে দেবে এমন ম্যাটেরিয়াল কিংবা রঙের কার্পেট। অন্যদিকে শীতকালে ঘর সাজাতে কার্পেটের ব্যবহার এমন হওয়া উচিত যেন, শীতকালে ঘরের ভেতর তা উষ্ণতা ধরে রাখতে পারে, আর এমন ধরনের কার্পেটের চাহিদা শীতের শুরুর দিকে বেড়ে যায় কয়েকগুণ।
শীতকালে ঘর সাজাতে কার্পেটের ব্যবহার হয়ে থাকে কার্পেটের আকৃতি এবং রুমের সাইজ এবং রুমে রাখা আসবাবের উপর নির্ভর করে। এর মধ্যে গোলাকৃতি, চারকোণা, আয়তাকার বা ডিম্বাকৃতির কার্পেটের ব্যবহার বরাবরই বেশি হয়ে থাকে। সাধারণত এসি ছাড়া রুমের ক্ষেত্রে সিনথেটিক কিংবা রাবারের কার্পেট ব্যবহার করা যেতে পারে। অন্যদিকে ড্রইং রুমের জায়গাটা যেহেতু প্রশস্ত হয়, সেখানে পুরো রুমের ফ্লোর আবৃত করে এমন কার্পেট অথবা দুইটি সমান সাইজের কার্পেটও রাখা যেতে পারে।
আপনি যদি পুরো ঘরে কিংবা বেড রুম দেশীয় সাজে সাজাতে পছন্দ করেন, সেক্ষেত্রে পাটের কার্পেট ব্যবহার করা যেতে পারে। তবে কী রঙের কার্পেট ঘরে ব্যবহার করছেন, তার উপর অনেকাংশেই নির্ভর ঘরে অনান্য সব আসবাব এবং ডেকোর আইটেমের সাথে তা কতটা মানানসই হচ্ছে। শীতকালে প্রকৃতি যেহেতু মলিন রূপ ধারণ করে, তাই এ সময়ে উজ্জ্বল রং যেমন– লাল, সবুজ, বাদামি, নীল, ল্যাভেন্ডার ইত্যাদি রঙ এর কার্পেটে ঘরের ভেতরটা আরও উজ্জ্বল দেখাবে।
ঢাকায় কার্পেট মার্কেট
ঢাকায় কার্পেট মার্কেট রয়েছে বেশ কয়েকটি লোকেশনে। এর মধ্যে এলিফ্যান্ট রোড, নিউমার্কেট, ডিসিসি উল্লেখযোগ্য। কেননা, এই লোকেশনগুলোতে আপনি আপনার চাহিদা মতো ডিজাইনে আকর্ষণীয় সব কার্পেট পেয়ে যাবেন নিঃসন্দেহে।
পাটের এবং সিনথেটিক কার্পেটের ব্যবহার মূলত সবচেয়ে বেশি হয়ে থাকে। এক্ষেত্রে পাটের কার্পেটের দাম তুলনামূলক কম, তবে গুণগত মান, আকৃতি এবং ডিজাইনের উপর ভিত্তি করে সিনথেটিক কার্পেট এর দাম ৪-৫ হাজার থেকে শুরু করে কয়েক লাখ টাকা পর্যন্তও হতে পারে। তবে কার্পেটের রোলগুলো মূলত বিক্রি হয় স্কয়ার ফিট হিসেবে। যার দাম ৩০ থেকে ৩০০ বা এর অধিক টাকার হয়ে থাকে। তবে কার্পেট প্রতি খরচ হওয়ার পাশাপাশি কার্পেট বসাতে খরচ পড়বে প্রতি স্কয়ার ফিটে ৫ থেকে ১৫ টাকার মতো।
তবে বাসায় ব্যবহার করা ছাড়াও মসজিদ এবং অফিসের ফ্লোরের জন্যও কার্পেট ব্যবহার করা হয়। এক্ষেত্রে ম্যাটেরিয়াল, আকৃতি এবং ডিজাইন ভেদে কার্পেটের দামে তারতম্য দেখা দেয়। গজ হিসেবে বিক্রি করা এই কার্পেটের দাম প্রতি গজ ৬৫০ টাকা থেকে ২,৪০০ টাকা পর্যন্ত হতে পারে।
শীতকালে ঘর সাজাতে কার্পেটের ব্যবহার ঘরের সৌন্দর্য যেমন বাড়িয়ে দেবে, তেমনি এর যত্ন নেয়া পরিষ্কার রাখার বিষয়টিও সমান গুরুত্ব পাবে। আর এ কারণেই প্রতিদিন ব্রাশ দিয়ে কার্পেট পরিষ্কার করা প্রয়োজন এবং দুই সপ্তাহে অন্তত একদিন ভ্যাকুয়াম ক্লিনার দিয়ে পরিষ্কার করা উচিত এবং এর সাথে সম্ভব হলে রোদেও দেওয়া উচিত।
[ad_2]