[ad_1]
Reading Time: 3 minutes
পবিত্র রমজান মাসে সারাদিন ব্যাপী রোজা রাখার পাশাপাশি শরীরকে সুস্থ রাখা বিশেষভাবে জরুরি। আর একারণেই রোজার মাসেও দৈনন্দিন রুটিনের মধ্যে থাকা প্রয়োজন। খাবার খাওয়া, বিশ্রাম নেয়ে, প্রার্থনা করা এবং দৈনন্দিন কাজ করা ইত্যাদি সবকিছুই যদি নিয়ম অনুযায়ী করা যায়, তবে দিন ব্যাপী রোজা রাখার পরও শরীর এবং মন দুটোই সুস্থ রাখা সম্ভব। রমজানে রোজা ভালোভাবে পালনের জন্য শারীরিক সুস্থতা থাকা তাই খুবই প্রয়োজনীয়। চৈত্র মাসের এই সময়ে কখনো ভীষণ গরম, কখনো আবার বৃষ্টি। এছাড়া ঘণ্টার পর ঘণ্টা ট্রাফিক জ্যামে বসে থাকা তো রয়েছেই। তাই দিনের অনেকটা সময় আমাদের যেহেতু না খেয়ে কাটাতে হয়। এই না খেয়ে কাটানো সময়ে শরীর তার সংরক্ষণকৃত কার্বোহাইড্রেট এবং ফ্যাট থেকে এনার্জি নিয়ে কাজ সঞ্চালন করে থাকে। এক্ষেত্রে শক্তি সঞ্চালনের জন্য সঠিক খাদ্যভাসের পাশাপাশি আরও আনুষাঙ্গিক কিছু বিষয় মেনে চলা অত্যন্ত জরুরী। আর তাই চলুন জেনে নেয়া যাক রমজান মাসে সুস্থ থাকার প্রয়োজনীয় কিছু টিপস।
যা যা খাওয়া উচিত
ইফতার
রমজান মাসে সুস্থ থাকতে ইফতারের সময় অতিরিক্ত খাবার খাওয়ার প্রবণতা এড়িয়ে চলা উচিত। অনেক ধরনের খাবারের ভিড়ে ঝাঁপিয়ে না পড়ে, বরং পুষ্টিকর খাবার গুলোই এসময় রাখা উচিত খাদ্য তালিকায়। ইফতারের পরে আমরা অনেক ভাজাপোড়া, চর্বিযুক্ত এবং মিষ্টি জাতীয় খাবার খেয়ে ফেলি। এ ধরনের খাবার শরীরে কোলেস্টেরল, ট্রাইগ্লিসারাইড এবং পেটে গ্যাস্ট্রোনমিক্যালের মাত্রা বৃদ্ধি করে থাকে। যার ফলে রোজার দিন গুলো হয়ে উঠে বিষাদময়। তবে সঠিক খাদ্যভাসের মাধ্যমে পুষ্টিকর এবং স্বাস্থ্যকরভাবে থেকে রোজা পালন করা সম্ভব।
সেহরি
রোজা রাখার শুরুটা যেহেতু হয় সেহরি দিয়ে, তাই সেহরির খাদ্য তালিকায় রাখা উচিৎ প্রোটিন সমৃদ্ধ, আঁশযুক্ত, সুষম, দ্রুত হজম হয়ে যায় এমন খাবার। সেই সাথে যথেষ্ট পরিমাণে পানি খাওয়া, যেন সারা দিন হাইড্রেটেড থাকা যায়। ভাত, মাছ-মাংস যেমন খাবার তালিকায় রাখতে হবে, তেমনি এর সাথে শাকসবজি, ফল, বাদাম ইত্যাদিও রাখা জরুরি। এছাড়া দুধ ও দুগ্ধজাত খাবার, ডিম ইত্যাদিও রাখতে হবে খাবারের তালিকায়।
সেহরিতে যে খাদ্য এড়িয়ে চলা উচিৎ
সেহরিতে ভাজাপোড়া, অতিরিক্ত চিনি ও চর্বিযুক্ত খাবার, মাত্রাতিরিক্ত খাদ্য গ্রহণ ও অতিরিক্ত চা বা কফি খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। রোজার সময় ধূমপান করা থেকেও বিরত থাকুন।
ইফতারে কী খাওয়া উচিৎ
দিনভর রোজা রাখার পর ইফতারি হিসেবে বেছে নিতে পারেন মৌসুমি ফলের শরবত। খেজুর খাওয়া উচিৎ, দু-তিনটির বেশি খাওয়া ঠিক নয়। কারণ এতে সুক্রোজের পরিমাণ অনেক বেশি থাকে। কাঁচা ছোলা ভিটামিন সি এর খুব ভালো উৎস। প্রতিদিনের ইফতারে কাঁচা ছোলা নিশ্চিত করুন। আপনি চাইলে টাটকা সবজি দিয়ে তৈরি এক বাটি স্যুপ দিয়ে ইফতার সেরে ফেলতে পারেন। স্যুপ একদিকে যেমন পানির অভাব পূরণ করবে তেমনি এটি পাকস্থলীর জন্য উপকারী হবে। ইফতারের সাথে আপনি আরও বেছে নিতে পারেন সালাদ। রোজার মাসে ভাজাপোড়া এতটাই খাওয়া হয় যে শাকসবজি তেমন করে খাওয়া হয় না। তাই ইফতারে বেশি করে সালাদ খেয়ে সেই চাহিদা পূরণ করতে পারেন। সবচেয়ে জরুরী যে খাদ্য উপাদান তা হচ্ছে পানি। খাবারের সমাহারে সবচেয়ে প্রথমে যা মনে আসবে তা হচ্ছে পানি। পানির কোন বিকল্প নেই, তাই যতটুক সম্ভব পানি পান করুন। এই গরম আবহাওয়ায় খেজুর, পানি, স্যুপ ও সালাদ দিয়ে করতে পারেন এবারের ইফতার।
ইফতারে কী কী খাদ্য এড়িয়ে চলা উচিৎ
ইফাতারে ভাজাপোড়া একদম এড়িয়ে চলুন। যদিও ইফতারে ভাজাপোড়া না খেলে আমাদের চলেই না, তবুও এটিকে পরিহার করুন। এই ভাজাপোড়ার ফলে আমাদের শরীরে চর্বির মাত্রা বৃদ্ধি হয়। এছাড়া গ্যাস্ট্রোনোমিকাল সমস্যাগুলি বৃদ্ধি পায় এবং ক্লান্তি ও অসুস্থতা সৃষ্টি হয়। কফি, সোডা কিংবা চা একেবারেই এড়িয়ে চলুন। কেননা, ক্যাফেইন আপনার শরীরে তরল, লবণ এবং অন্যান্য খনিজ পদার্থের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। যা শরীরকে হাইড্রেটেড রাখে না। বরং, অনিদ্রা এবং অস্থিরতা সৃষ্টি করে। প্রক্রিয়াজাত কার্বনেটেড পানীয় গুলো অবশ্যই এড়িয়ে যাওয়া উচিৎ কেননা, এতে ক্যালোরির মাত্রা থাকে অনেক, যা শরীরের জন্য যথেষ্ট ক্ষতিকর। অত্যধিক মিষ্টি জাতীয় খাবারও এড়িয়ে চলা উচিৎ। এই সমস্ত খাদ্য শরীরে অতিরিক্ত মেদ এবং শারীরিক জটিলতাও সৃষ্টি করে তাই এসব খাদ্য বর্জন করাই শ্রেয়। আর যাদের ডায়েবেটিকস রয়েছে তারা মিষ্টি জাতীয় খাবার নিয়ে খুবই সতর্ক থাকবেন। হুটহাট ঠান্ডা পানি দিয়ে ইফতার করবেন না। বেশি ঠাণ্ডা পানি রক্তনালি সংকোচন বাড়িয়ে হজমে সমস্যা করে। তাই এসময় স্বাভাবিক তাপমাত্রার পানি পান করুন।
আর তাই রোজায় সুস্থ থাকতে এবং সঠিক নিয়মে রোজা পালন করতে সঠিক নিয়মকানুন এবং খাদ্যভাস গড়ে তোলা অত্যন্ত জরুরি। এতে করে সিয়াম সাধনার মাধ্যমে রোজা পালন করা হবে শান্তির। রমজান মাসে সুস্থ থাকতে তাই অনুসরণ করুন প্রয়োজনীয় এই টিপসগুলো।
[ad_2]