তীব্র গরমে ঘর ঠান্ডা রাখার প্রয়োজনীয় কিছু টিপস

[ad_1]

Reading Time: 4 minutes

চৈত্র মাসের শেষের দিক থেকে শুরু হওয়া তীব্র তাপপ্রবাহ যেন গ্রীষ্মে এসে আরও তীব্রতর রূপ ধারন করেছে। পুরো বাংলাদেশ জুড়ে বয়ে যাওয়া আবহাওয়ার এই পরিবর্তন জনজীবন এক অর্থে বিপর্যস্ত করে তুলেছে। এমন অবস্থায় ঘরে কিংবা ঘরের বাইরে টিকে থাকাই যেন বিশাল এক চ্যালেঞ্জ। ঢাকায় তাপমাত্রার বেশ বড় ধরনের এই পরিবর্তন ৫৮ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ তাপমাত্রার রেকর্ড ভেঙ্গে দিয়েছে। ফলে তীব্র তাপদাহের এ সময় ঘরের বাইরে সময় কাটানো বেশ কষ্টকরই হয়ে উঠেছে। তবে ঘরের বাইরের মতো অবস্থা যেন ঘরের ভেতরেও অনুভূত না হয়, সে জন্য তীব্র গরমে ঘর ঠান্ডা রাখার টিপস সম্পর্কে জেনে, সে অনুযায়ী ঘরে ছোটখাটো কিছু পরিবর্তন আনা যেতে পারে। 

উত্তাপ কমাতে ঘরে গাছ রাখা, বরফ পদ্ধতি, মোটা কাপড়ের পর্দা ব্যবহার করা সহ এনার্জি সেভিং লাইট ব্যবহারের মতো ছোটখাট কিছু পরিবর্তন আনলে ঘরের ভেতরের তাপমাত্রা কিছুটা হলেও সহনীয় পর্যায়ে রাখা সম্ভব। তবে চলুন তীব্র গরমে ঘর ঠান্ডা রাখার টিপস গুলো সম্পর্কে আরও বিস্তারিত জেনে নেয়া যাক আজকের ব্লগ থেকে। 

ভারী এবং গাঢ় রঙের পর্দার ব্যবহার 

সাধারণত ঘরের জন্য আমরা হালকা রঙের পর্দাই মূলত ব্যবহার করে থাকি। তবে রোদের অতিরিক্ত তাপ থেকে মুক্তি পেতে ভারী ফেব্রিকের গাঢ় রঙের পর্দার ব্যবহারই মূলত ঘরকে ঠান্ডা রাখতে সহায়তা করবে। এক্ষেত্রে বেগুনি, নীল, খয়েরী কিংবা সবুজ রঙকে বেছে নেয়া যেতে পারে। এতে করে বাহিরের অতিরিক্ত তাপ ঘরের ভেতর প্রবেশে বাধাপ্রাপ্ত হবে এবং ঘর থাকবে শীতল।   

ঘর জুড়ে গাছের ছায়া 

তীব্র তাপদাহ থেকে রক্ষা পেতে গাছের বিকল্প কিছু হতেই পারে না। আর এখন যেহেতু ঘর সাজাতে অনেকেই বিভিন্ন ধরনের প্ল্যান্টস ঘরের বিভিন্ন কোণে, ব্যালকনিতে রাখেন, তাই গরমে ঘর ঠান্ডা  রাখার টিপস হিসেবে ইনডোর প্ল্যান্টস এর কোন বিকল্প নেই।

ফিলোডেনড্রন, প্যাথোস, পিস লিলি, স্নেক প্ল্যান্ট, ক্যাকটাস, বিভিন্ন প্রকার অর্কিড এর মতো প্ল্যান্টস একদিকে যেমন তাপমাত্রা কমিয়ে রাখতে সহায়তা করবে, অন্যদিকে ঘরের ইন্টেরিয়রে আনবে ভিন্নতা। আর এই প্ল্যান্টস রাখার জন্য বাহারি ডিজাইনের গাছের টব এর ব্যবহারও কিন্তু ঘরের সৌন্দর্য বাড়িয়ে দিবে। এই গাছগুলো ঘরের ভেতরের এবং বাইরের বাতাসে আর্দ্রতা ধরে রাখার পাশাপাশি সঠিক তাপমাত্রা ধরে রাখতেও সহায়তা করে।   

বরফ বা পানি পদ্ধতি 

তীব্র গরম থেকে রক্ষা পেতে ঘরের ভেতর ফ্যানের নিচে একটি বাটিতে বরফের টুকরা কিংবা ঘরের একটি কোণে পানি ভর্তি বালতি রাখলে তা গরম তাপ শুষে নিয়ে ঘরকে শীতল রাখতে সহায়তা করবে। যদিও এতে করে দ্রুতই ঘরের তাপমাত্রা কমে যাবে না, তবে অতিরিক্ত তাপদাহ থেকে কিছুটা হলেও ঘরকে রক্ষা করবে।

জানালার গ্রিলে ভেজা মাদুর ঝোলানো

ঘরের দরজা-জানালা দিয়ে যেহেতু গরম তাপ প্রবেশ করে, তাই দরজা কিংবা জানালার সামনে ভেজা মাদুর ঝুলিয়ে দিলে তা ধীরে ধীরে তাপ শুষে নেবে এবং ঘরের ভেতর অতিরিক্ত গরম তাপ প্রবেশে বাধা সৃষ্টি করবে।  

ঘরের গরম বাতাস বের করে দেয়ার ব্যবস্থা 

তীব্র তাপ প্রবাহের সময় সাধারণত ঘরের ভেতর গরম বাতাস আটকে থাকে। বিশেষ করে ছাদের নিচের ফ্লোরে যাদের বাসা, তাদের ক্ষেত্রে এ সময়টা যেন আরও অসহনীয় হয়ে যায়। এক্ষেত্রে ঘরের ভেতর আটকে থাকা গরম বাতাস বের করে দেয়া জরুরি। এক্ষেত্রে বাথরুম এবং রান্নাঘরে ‘এক্সস্ট ফ্যান’ ব্যবহার করতে পারেন।  

এনার্জি সেভিং লাইট এর ব্যবহার 

অনেক ঘরের ভেতরেই প্রাকৃতিক আলো প্রবেশের তেমন সুযোগ থাকে না। আর আলো প্রবেশ করলেও তা যথাযথ হয়ও না। এতে করে ঘরের ভেতর কৃত্রিম আলো ব্যবহার করা হয়। তবে বাল্বের আলোয় ঘরের ভেতরটা কিন্তু বেশ গরমও হয়ে ওঠে। সেক্ষেত্রে এলইডি লাইট ব্যবহারের ফলে ঘরের ভেতরে তাপ যেমন অনুভূত হয় না, তেমনি এলইডি লাইট বেশ বিদ্যুৎ সাশ্রয়ীও বটে। আর খরচের কথা চিন্তা করলেও কিন্তু এলইডি লাইট ব্যবহারের সুবিধাও বেশ। তাই তীব্র গরমে ঘর ঠান্ডা রাখার টিপস হিসেবে বিভিন্ন ডিজাইনের ছোট-বড় আকৃতির এলইডি লাইট বেছে নিতে পারেন।  

চুলা এবং অন্যান্য যন্ত্রপাতির ব্যবহার কমিয়ে আনা 

অনেকক্ষেত্রেই দেখা যায় রান্না শেষ করার পরও আমরা তৎক্ষণাৎ গ্যাসের চুলা বন্ধ করতে ভুলে যাই। এমন অবস্থায় ঘর আরও বেশি গরম হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই ব্যবহার শেষে অবশ্যই খেয়াল করে চুলা বন্ধ রাখতে হবে। এমনকি শুধু চুলাই নয়, ডিসওয়াশার, ওয়াশিং মেশিং, ড্রায়ার ইত্যাদি যন্ত্রের ব্যবহারও ঘরের তাপমাত্রা বাড়িয়ে দেয়। তাই এ সকল যন্ত্রপাতির ব্যবহার যতটা সম্ভব কম ব্যবহার করা উচিত। 

ন্যাচারাল ফেব্রিক এর ব্যবহার 

গরমের তীব্রতা থেকে আরাম পেতে এ সময়ে সিনথেটিক, সিল্ক এ ধরনের ম্যাটেরিয়াল এড়িয়ে চলাই উত্তম। কেননা, এতে করে গরমে অস্বস্তি তেমন একটা অনুভব হবে না। আর তাই শুধু পোশাক পরিধানের ক্ষেত্রেই নয়, বরং অন্দরে ব্যবহৃত কাপড় যেমন- পর্দা, সোফা এবং বেড কভার, সব কিছুর জন্যই বেছে নিতে পারেন কটন বা সুতির মতো ন্যাচারাল ফেব্রিক। সাধারণত সুতি কাপড় ‘সামার ফ্রেন্ডলি’ ফেব্রিক হিসেবে পরিচিত। আর তাই তো গরমে ঘর ঠান্ডা  রাখার টিপস হিসেবে সুতি ফেব্রিক এর ব্যবহার ঘরের জন্য হবে আরামদায়ক।   

গ্রীষ্মের সময়টা যেহেতু শুরু হয়ে গিয়েছে তীব্র গরম দিয়ে, তাই গরমে ঘর ঠান্ডা রাখার টিপস সম্পর্কে জেনে এবং সহজ এই টিপসগুলো অনুসরণ করে ঘরের ভেতরের তাপমাত্রা কিছুটা হলেও কমিয়ে এনে, ঘর ঠান্ডা রাখা সম্ভব। 

[ad_2]

Join The Discussion

Compare listings

Compare